ফুলবাড়ী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি
বিএসএফের গুলিতে কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী সীমান্তে গতকাল এক বাংলাদেশী কিশোরী নিহত হয়েছে। ওই কিশোরীর নাম ফেলানী (১৫)। নিহত ফেলানী হলো নাগেশ্বরী উপজেলার দক্ষিণ রামখানা বানারভিটা গ্রামের নুরু মিয়ার মেয়ে। এ ঘটনায় বিডিআর কড়া প্রতিবাদ ও লাশ ফেরত চেয়ে বিএসএফকে একটি চিঠি দিয়েছে। বর্তমানে ওই সীমান্তে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।
সীমান্তবাসী এবং বিডিআর সূত্রে জানা গেছে, সাত/আট বছর আগে কাজের প্রলোভন দেখিয়ে পাচারকারীর কবলে পড়ে ভারতের ভূখণ্ডে প্রবেশ করেন নিহতের বাবা নুরু মিয়াসহ অন্য সদস্যরা। সেখানে বেশ কিছুদিন থাকার পর দালালদের হাত থেকে রক্ষা পেয়ে দিল্লিতে ইটভাটার কাজে যোগদান করেন। দীর্ঘদিন ইটভাটার কাজে নিয়োজিত থাকার পর বৃহস্পতিবার দেশে ফেরার জন্য চৌধুরীহাট খেতাবের কুটি সীমান্তের ৯৪৭-এর থ্রি-এস পিলার সন্নিকটে আশ্রয় নেন তারা। গতকাল ভারতীয় চোরাকারবারিদের অর্থের বিনিময় সহযোগিতা নিয়ে কাঁটাতারের বেড়া বাঁশের সাহায্যে টপকিয়ে আসার পথে ভোর সোয়া ৬টার সময় টহলরত বিএসএফের গুলিতে নিহত হয় ফেলানী। এ সময় তার লাশ কাঁটাতারে ঝুলে থাকলেও অন্য সদস্যরা পালিয়ে আসতে সক্ষম হন।
এদিকে গুলির শব্দ ও নিহতের খবর পেয়ে অনন্তপুর বিওপির বিডিআর সদস্যরা ঘটনাস্থলে ছুটে যান এবং বাংলাদেশী জনসাধারণকে উত্তেজিত না হওয়ার জন্য বাধা দেন। উত্তর অনন্তপুর সীমান্তের আবু রায়হান জানান, ভোরবেলা তিনি নুরু মিয়াকে রক্তমাখা দেখে চমকে ওঠেন এবং তার কাছ থেকে জানতে পারেন বিএসএফের গুলিতে তার মেয়ে নিহত হয়েছে। অনেক চেষ্টা করেও মেয়েটির লাশ নিয়ে আসতে পারেননি। প্রত্যক্ষদর্শী মোহাম্মদ জানান, গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর মেয়েটি আর্তচিত্কার শুরু করে এবং বাঁচাও বাঁচাও চিত্কার দিয়ে আধা ঘণ্টা পর অচেতন হয়ে পড়ে। পরে বিএসএফ সাড়ে ৪ ঘণ্টা পর ঝুলন্ত লাশ নামিয়ে নিয়ে যায়। কাশিপুর ভারপ্রাপ্ত কোম্পানি কমান্ডার নায়েক সুবেদার আ. জব্বার ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, লাশ ফেরত চেয়ে বিএসএফের কাছে একটি চিঠি দেয়া হয়েছে।
No comments:
Post a Comment