Sunday 1 January 2012

জৈন্তাপুরে ফের উত্তেজনা ডিবির হাওরে মাছ ধরতে বিএসএফের বাধা

জৈন্তাপুর (সিলেট) প্রতিনিধি

সিলেটের জৈন্তাপুর সীমান্তে বিজিবি বিএসএফ’র মধ্যে আবারও উত্তেজনা বিরাজ করছে। বংলাদেশী মত্স্যজীবীরা ডিবির হাওরে মাছ ধরতে গেলে বিএসএফ বাধা দেয়ায় এ উত্তেজনা দেখা দেয়। দু’পক্ষের পতাকা বৈঠক হলে মাছ ধরা বন্ধ হয়ে যায়।
জৈন্তাপুর গোয়াইনঘাট উপজেলার সীমান্ত নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিজিবি-বিএসএফ’র মধ্যে নানামুখী বিরোধ ও সংর্ঘষ চলে আসছিল। ভারতীয়রা বাংলাদেশী সীমান্ত এলাকায় জোর করে ভূমি দখল, পাকা ধান কেটে নেয়া, বিলের মাছ ধরে নিয়ে যাওয়া, কৃষকের হালের গরু ধরে নিয়ে যাওয়া, কৃষক ও শ্রমিকদের ধরে নিয়ে হত্যা ও নির্যাতন করা, সবজিক্ষেত পুড়িয়ে ফেলাসহ নানা অপকর্ম চালিয়ে আসছিল ভারতীয় বিএসএফ ও খাসিয়ারা। এসব বিষয় নিয়ে সীমান্ত এলাকায় একাধিকবার উভয়দেশের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। এতে বাংলাদেশের শতাধিক লোক আহত হন। গত দুই বছরে শ্রমিক, কৃষকসহ প্রায় ৭ জন নিহত হন, আহত হন শতাধিক। এ নিয়ে সীমান্ত এলাকায় দলমত নির্বিশেষে সীমান্ত রক্ষার দাবিতে ও ভারতীয়দের নির্যাতন থেকে রক্ষা পেতে সীমান্তবাসী বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রাম করতে থাকে। রেলমন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত ১৫ অক্টোবর জাফলংয়ে এক সভায় বলেন, ডিবির হাওর সীমান্ত ভূমি আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় এক ইঞ্চিও ভারতকে দেবে না। যারা বলছে সীমান্তের ভূমি ভারত নিয়ে গেছে আসলে তারা রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের জন্য আন্দোলন করছে। তিনি আরও বলেন, ডিবির হাওরের ভূমি আমি জৈন্তাবাসীকে উপহার দিয়ে গেলাম। এ ঘোষণায় ডিবির হাওর সীমান্ত এলাকার মত্স্যজীবীরা আনন্দে উত্ফুল্ল হয়ে ২৪ ডিসেম্বর ১২৮৪নং পিলারের ৪শ’ গজ ভেতরে মাছ ধরতে গেলে বিএসএফ দলবল নিয়ে বাংলাদেশী মত্স্যজীবীদের তাড়িয়ে দেয়। সংবাদ শুনে ডিবির হাওর সীমান্তের বিজিবি ক্যাম্প কমান্ডার নায়েব সুবেদার নজরুল ইসলাম ঘটনাস্থলে গেলে বিজিবি বিএসএফ’র মধ্যে বাক-বিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে পতাকা বৈঠকের সিদ্ধান্ত হয়।
গতকাল ১২৮৫নং পিলারের বিজিবি বিএসএফ’র মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সকাল ১০টা থেকে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত এ বৈঠক চলে। বৈঠকে বিজিবির পক্ষে নেতৃত্ব দেন ডিবির হাওর ক্যাম্প কমান্ডার নায়েব সুবেদার নজরুল ইসলাম, হাবিলদার আমানউল্লাহ। বিএসএফ’র পক্ষে মুক্তাপুর ক্যাম্প কমান্ডার রাম কিশান, হাবিলদার অতুল বর্মণসহ উভয়দেশের ১৫-২০ জন সদস্য উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক চলাকালে উভয়দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী সতর্ক অবস্থানে ছিল।
বৈঠক শেষে বিজিবি ক্যাম্প কমান্ডার নজরুল ইসলাম বৈঠক সফল হয়েছে বলেন। তবে তিনি বলেন, ভারতীয়রা ডিবির হাওর ক্যাম্পের সীমানা পর্যন্ত দাবি করে। তাদের দাবি প্রত্যাখ্যান করে তিনি বিরোধপূর্ণ বিলের ভূমি নিয়ে উচ্চপর্যায়ে সমাধানের কথা বলেন। সমাধান না হওয়া পর্যন্ত উভয়দেশের লোকজনকে বিলে মাছ ধরতে নিষেধ করেছেন।
এ বিষয়ে ডিবির হাওর এলাকার সুলেমান মিয়া, আবদুল মালেক, ইসমাইল মিয়া বলেন, আওয়ামী লীগের নেতারা বলেছেন সীমান্তে কোনো সমস্যা নেই। সুরঞ্জিত বাবু জাফলংয়ের সভায় ডিবির হাওরের বিল জৈন্তাবাসীকে উপহার দিয়ে গেছেন। তার উপহার পেয়ে আমরা খুশি হয়ে বিলে মাছ ধরতে যাই। কিন্তু বিএসএফ আমাদের বাধা দেয়। এ উপহার দিয়ে আমাদের কী লাভ হলো। বিলে মাছ ধরাকে কেন্দ্র করে উভয়দেশের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে।
http://www.amardeshonline.com/pages/details/2011/12/27/124199

No comments:

Post a Comment