Thursday 3 June 2010

ধর্ষণের ঘটনায় ঢাকা পলিটেকনিকে তোলপাড় : ধর্ষক দুই ছাত্রলীগকর্মী বহিষ্কার

28/04/2010
স্টাফ রিপোর্টার
ঢাকা পলিটেকনিক্যাল ইনস্টিটিউটে প্রথমবর্ষের এক ছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। ইনস্টিটিউট কর্তৃপক্ষ গতকাল বিভাগীয় প্রধানসহ শিক্ষকদের নিয়ে সভা করে ধর্ষক ছাত্রলীগের দুই কর্মীকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়ে ঘটনাটি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করছেন। দুদিন গত হলেও থানা পুলিশ এখনও কোনো মামলা নেয়নি। আসামিরা ইন্সটিটিউট এলাকায় এক প্রকার প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালেও পুলিশ তাদের গ্রেফতারের কোনো উদ্যোগ নেয়নি। এদিকে ধর্ষণের ঘটনা প্রকাশিত হওয়ায় সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। সাধারণ ছাত্রীরা ধর্ষক দুই ছাত্রলীগ কর্মীকে গ্রেফতার ও উপযুক্ত শাস্তির দাবি জানিয়েছে। গত রোববার দিনদুপুরে তেজগাঁওয়ের ঢাকা পলিটেকনিক্যাল ইনস্টিটিউটের ক্লাসরুমে প্রথমবর্ষের ছাত্রীকে ছাত্রলীগের জাকির গ্রুপের সদস্য মোবারক হোসেন ও অমিত ধর্ষণ করে। ছাত্রীর চিত্কারে ইনস্টিটিউটে শিক্ষকরা ছুটে আসেন। ছাত্রীকে বিবস্ত্র অবস্থায় উদ্ধার করে শিক্ষকদের রুমে নিয়ে যাওয়া হয়। ছাত্রীটি কান্নাজড়িত কণ্ঠে শিক্ষকদের কাছে তার করুণ পরিণতির কথা জানায়। উপস্থিত শিক্ষকরা এ ঘটনা শুনে হতভম্ব হয়ে যান। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তির কথা চিন্তা করে তারা বিষয়টিকে গোপন রাখেন। কিন্তু এ ঘটনা আস্তে আস্তে ছাত্র-ছাত্রীদের মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়ে। ঘটনা জানাজানি হলে শিক্ষকরা এনিয়ে জরুরি সভা আহ্বান করেন। গতকাল শিক্ষকদের জরুরি সভায় ছাত্রলীগে দুই ক্যাডার ইন্সটিটিউটের দ্বিতীয়বর্ষের ছাত্র মোবারক হোসেন ও তার সহযোগী একই বর্ষের অমিতকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এই দুই ধর্ষক যাতে কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আর ভর্তি হতে না পারে সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। যদি তারা কোথাও ভর্তি হতে যায় তাহলে তাদের সংশ্লিষ্ট থানায় সোপর্দ করারও সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
এদিকে এ ঘটনায় ইন্সটিটিউটের সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। ছাত্রলীগ ক্যাডারদের ভয়ে কোনো ছাত্র-ছাত্রী এ ঘটনায় প্রতিবাদও করতে পারেনি। তারা সন্ধিহান যে, এ ঘটনার বিচার কর্তৃপক্ষ আদৌ করতে পারবে কিনা? গতকাল ইনস্টিটিউট এলাকায় গিয়ে থমথমে পরিস্থিত লক্ষ্য করা যায়। সাধারণ ছাত্ররা যাতে মিছিল না করতে পারে সেজন্য ছাত্রলীগ ক্যাডাররা কড়া নজর রাখছে।
অপরদিকে দুদিন গত হলেও এখন পর্যন্ত পুলিশ দুই ধর্ষককে গ্রেফতারের কোনো উদ্যোগ নেয়নি। গতকাল পর্যন্ত থানায় কোনো মামলাও দায়ের হয়নি। তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার ওসি ওমর ফারুক জানান, ভিকটিম বা অন্য কোনো পক্ষ থানায় অভিযোগ না করার কারণে এখন পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি। মামলা হলে তিনি আইনানুগ কার্যকর ব্যবস্থা নেবেন। তবে ঘটনাটি তিনি শুনেছেন বলে জানিয়েছেন। সূত্র জানায়, লোকলজ্জার কারণে ধর্ষিতা মেয়ের পক্ষে এখনও কোনো অভিযোগ জানানো হয়নি। ইনস্টিটিউট কর্তৃপক্ষ বাদী হয়ে মামলা করার বিষয়েও গতকাল পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
এ ব্যাপারে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ অধ্যাপক রফিকুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোনো কথা বলতে চাননি। শুধু বলেন, দোষী দুই ছাত্রলীগ কর্মীকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
http://www.amardeshonline.com/pages/details/2010/04/28/29522

No comments:

Post a Comment